স্কুল আছে,শিক্ষিকাও আছে, অথচ পড়ুয়াদের দেখা নেই। পড়ুয়া নেই, তাই ক্লাস হয় না। অনেক দিন আর ঘন্টা বাজার শব্দ কানে আসে না গ্রামবাসীদের।
স্কুল বিল্ডিং আছে। সেখানে প্রতিদিন নিয়ম করে আসেন শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারী। কিন্তু নেই কোনও ছাত্রী। সব মিলিয়ে
একপ্রকার বন্ধের মুখে এলাকার একমাত্র বালিকা বিদ্যালয়। স্কুল বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গরু চড়ছে। বেঞ্চ জুড়ে ধুলোর আস্তরণ। এমনকি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নানান অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
বর্ধমান ১ নং ব্লকের কুড়মুন উচ্চ প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অপরূপা রায় জানান,২০১০ সালে তৈরি হওয়ার পর সেই বছরই প্রায় শ’খানেক ছাত্রী নিয়ে স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হয়।সেই সময় ৪ জন শিক্ষিকা ছিলো। ধীরে ধীরে ছাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করে।গত তিন বছর ধরে স্কুলে নতুন করে কোনও ছাত্রী ভর্তি হয়নি।২০২০-২১বর্ষে স্কুলে ৩ জন ছাত্রী থাকলেও তারা পাশ করে যাওয়ার পর বর্তমানে স্কুলে কোনও ছাত্রীই নেই।অন্যদিকে স্কুলে তিনি আর একজন অশিক্ষক কর্মচারী আছেন।
এই সমস্যা কেনো?
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়।এখন আবার প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পঞ্চম শ্রেণীর পঠন পাঠন হচ্ছে।তাই শুধুমাত্র ষষ্ট,সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির জন্য ছাত্রীদের আর এই স্কুলে অভিভাবকরা ভর্তি করছেন না। কেননা নবম ও দশম শ্রেণীর জন্য আবার তাদের অন্য স্কুলে ভর্তি করতে হচ্ছে।তাই এই সমস্যা।
স্থানীয়রা জানান,এলাকাবাসীদের দাবী মেনে ২০১০ সালে এই স্কুল তৈরি হয়।এমনকি গ্রামেরই কয়েক জন স্কুলের জন্য জমিও দান করেন। গ্রামের একমাত্র বালিকা বিদ্যালয়ের এই অবস্থার জন্য তাদের মন খারাপ।তবে তারা চান বিদ্যালয় তার পুরোনো গৌরব আবার ফিরে পাক।আর তার জন্য বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীত করার দাবী তাদের।বিদ্যালয় মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীত হলে আবার নতুন করে ছাত্রী ভর্তি হবে বলে তাদের অভিমত।
যদিও এই বিষয়ে বর্ধমান ১ নং ব্লকের শিক্ষাকর্মাধ্যক্ষ কৃষ্ণেন্দু গোস্বামী জানান,বিদ্যালয় তার পুরোনো অবস্থায় ফিরে আসুক এটা তারাও চান।এরজন্য তাদের পক্ষ থেকেও শিক্ষাদপ্তরকে আবেদন করা হয়েছে।বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীত করা গেলে এই সমস্যা মিটে যাবে বলে তিনিও জানান।