আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার অভিযোগে অভিযুক্ত কাউন্সিলর শপথ নিলেন এসডিও অফিসে।তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান এসডিও।
নাবালিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ।
অভিযোগ বর্ধমান পুরসভার নব নির্বাচিত কাউন্সিলর বসিরউদ্দিন আহমেদ@ বাদশার বিরুদ্ধে।
পুলিশ তাকে এখনও গ্রেপ্তার করে নি।অথচ গত ১৭ই মার্চ বর্ধমান উত্তর মহাকুমা শাসকের দপ্তরে এসে শপথ নিলেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর ।
শনিবার এই খবর চাউড় হতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায় শহর বর্ধমানে। উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ পুরসভার ফলাফল ঘোষণার দিন বর্ধমান শহরের বাবুরবাগ এলাকায় এক নাবালিকা ছাত্রীর বাড়িতে হামলা,শ্লীলতাহানি ও মারধোরের অভিযোগ ওঠে এলাকার নব নির্বাচিত কাউন্সিলার বাদশা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরই বাড়ি থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান থানার পুলিশ।
পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ধমান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হয় বসিরউদ্দিন আহমেদ সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে বিক্ষোভ দেখায় বাম ছাত্র,যুব ও মহিলা সংগঠন।
পাশাপাশি বিক্ষোভ আন্দোলনে নামে কংগ্রেসও।
খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরী পরিবারের সাথে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
পরিবারের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৪জন মহিলা সহ ১জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করলেও বসিরউদ্দিন আহমেদ এখনও গ্রেপ্তার হন নি।
এদিকে এই আবহের মাঝেই গত ১৬ মার্চ বর্ধমান পুরসভার নবনির্বাচিত ৩৩ জন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার শপথ নেন বর্ধমান সদর মহকুমা শাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাসের কাছে। শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে হাজির হননি বসিরউদ্দিন আহমেদ ওরফে বাদশা ।
কিন্তু তারপরেই ১৭ মার্চ দ্বিতীয়ার্ধে তিনি মহকুমাশাসকের চেম্বারে এসে শপথ নেন। শপথ নেবার খবর চাউড় হতেই শুরু হয় বিতর্ক।
বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমা শাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস জানিয়েছেন, পুর আইন অনুসারে নোটিফিকেশনের ৩ মাসের মধ্যে শপথ নিতে হয়। ১৭ তারিখ তাঁর অফিসে এসেছিলেন। তাঁকে তিনি শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন কাউন্সিলার হিসাবে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।আমি পুলিশের সাথে কথা বলবো।
বিজেপির জেলা সাধারন সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের অভিযোগ, পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না বলছে। অথচ সেই কাউন্সিলর পুলিশকে যিনি নিয়ন্ত্রণ করেন সেই মহকুমা শাসকের কাছে শপথ নিয়ে যাচ্ছেন,অথচ পুলিশ বলছে জানি না।তদন্ত ঠিক মতো হচ্ছে না।এটা ওই নাবালিকা পরিবারের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে।
এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন,আর একবার বর্ধমান শহরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থাকলো।আমরা আতঙ্কিত,নিরাপত্তা নিয়ে।যিনি বর্ধমান শহরের আইনশৃংখলার রক্ষক তার কাছে গিয়ে শপথ গ্রহন করছে।কোথায় গেল তদন্ত?
এসডিও এর কাছে গিয়ে শপথ গ্রহন করতে পারছেন আর পুলিশ বলছে খুঁজে পাচ্ছে না? জেলা প্রশাসন দোষীকে আড়াল করার চেস্টা করছে।
যদিও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানান,এ বিষয়ে আমার জানা নেই।পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেবে।প্রশাসন আইনের দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।বাংলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা আছে।প্রশাসন কোনো দলের কথায় চলে না।
এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীস সেন জানান,বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।