ঘটনার পর চারদিন কেটে গেলেও আজও থমথমে গলসীর সন্তোষপুর গ্রাম,পুরুষ শুন্য।চলছে পুলিশ ও র্যাফের টহল।গ্রামছাড়া অভিযুক্ত মনোজ ঘোষ,তার জ্যাঠা ও কাকার পরিবার। তবে ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্ত মনোজ ঘোষ গ্রেপ্তার হলেও মনোজ ও মনোজের আত্মীয়দের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় কয়েকটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে?
কেন আগুন লাগানো হলো তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
শুধুই কি খুনের প্রতিশোধস্পৃহা, নাকি পিছনে আছে অন্য কারণ, উঠছে প্রশ্ন।
রবিবার রাতে গলসীর সন্তোষপুরে উৎপল ঘোষ খুন। খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রতিবেশী মনোজ ঘোষ।
সোমবার ময়না তদন্তের পর দেহ বাড়িতে আসার পরই ক্ষোভের আগুনে জ্বলে অভিযুক্ত মনোজ ও তার কাকা হারাধান ঘোষের বাড়ি। হারাধনের দুটি ট্রাকটর ও খড়ের গাদায় আগুন লাগানো হয়। পাশাপাশি ভাংচুর করা হয় মনোজের জ্যেঠতুতো দাদা মলয় ঘোষের বাড়ি এবং তার গ্যারেজে থাকা চারচাকা গাড়িতে লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন।
আগুন লাগানো ও ভাংচুরের অভিযোগে গতকাল পুলিশ ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।আজও আরোও ১ জনকে গ্রেপ্তার করে গলসী থানার পুলিশ।
সোমবার ময়নাতদন্তের পর উৎপলের দেহ বাড়িতে আসার পর উত্তেজিত জনতা আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটায়।গ্রামে হাজার খানেক লোকের সমাগম হয়।
উৎপলের পরিবারের দাবী গ্রামে বহিরাগতরা এসেছিলো,চেস্টা করেও আগুন লাগানো আটকাতে পারিনি বরঞ্চ তাদের হুমকির মুখে পড়তে হয়।
উৎপলের মৃত্যুর পর কেনই বা লাগিয়ে দেওয়া হলো আগুন তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ বিভিন্ন দিকের মধ্যে দুটি বিষয়কে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে।
এক,উৎপলের পরিবারের দাবী অভিযুক্ত মনোজ দীর্ঘ দিন ধরেই উৎপলের স্ত্রীকে উত্যক্ত করতো।প্রতিবাদ ও মনোজের বিরুদ্ধে থানায় যাওয়ায় খুন হতে হয় উৎপলকে।অভিযোগ খুনের সময় ব্যবহৃত কুড়ল মনোজের কাকা হারাধানের বাড়ি থেকে নেওয়া হয়েছিলো।পাশাপাশি মনোজের কাজকর্মে পরোক্ষে কার্যত কাকা হারাধনের ইন্ধন ছিলো এবং আরেক জেঠতুতো দাদা মলয় ঘোষেরও সমর্থন ছিলো বলে অভিযোগ।সেই রোষ থেকেই আগুন লাগানো হয়েছিলো কিনা।
নাকি বহিরাগত লোকজন আসায় পরিকল্পিত ভাবে আগুন লাগানো হয়।
যদিও গ্রামে বহিরাগতদের গ্রামে আসার বিষয়টি দাবী করছে উৎপলের পরিবার। তাদের দাবী চেস্টা করেও আটকানো যায়নি।আমরা বাঁধা দিলে হুমকিও শুনতে হয়।
ঠিক সেখান থেকেই পুলিশ দ্বিতীয় বিষয়টি খতিয়ে দেখছে,আগুন লাগানোর ক্ষেত্রে বহিরাগতদের হাত আছে কিনা? থাকলে কেন?
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,বেশ কয়েকমাস ধরে গলসী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালির খাদান বন্ধ করে দেয়।ফলে একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালির কারবার।স্বাভাবিক ভাবেই অবৈধ বালি কারবারিদের একটা রোষ পুলিশের উপর ছিলো।সেই রোষ এখানে পড়ে ইন্ধন দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে গলসীর ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ
গোটা রাজ্য জুড়েই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে।আগামি দিনে সুরক্ষা আদৌও থাকবে কিনা জানি না।কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়েছি।