হেডলাইনস্ বেঙ্গল ডেস্ক, ভাতার— বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই সেচখালের ধারে থাকা গাছ বিক্রি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠল। একই সঙ্গে প্রধান তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে বলে বিডিও (ভাতার)-র কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ জানালেন সাহেবগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ঘোলদা গ্রামের তৃণমূল সদস্য হারাধন শেখ। যদিও সদস্যের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান বিনয়কৃষ্ণ ঘোষ। তবে তিনি বন দফতরের অনুমতি যে নেননি তা মেনে নিয়েছেন। গ্রামবাসীরা ট্রাকে থাকা কাটা গাছ আটকে রেখে দিয়েছে।
বিডিও (ভাতার) অরুণ কুমার বিশ্বাস শুধু বলেন, “বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘোলদা গ্রামের সেচখালের দুই পাড়ে চকচকে পুল থেকে ভেটাগোর পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি সোনাঝুরি, শিশু ও তালগাছ রয়েছে। প্রায় ১০-১২ বছর আগে গাছগুলি লাগানো হয়েছে। ওই গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গাছগুলি রক্ষনাবেক্ষণ করত। গ্রামবাসীদের দাবি, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিক্রি হওয়া অর্থের বড় অংশ স্বনির্ভর গোষ্ঠী পাবে, একটা অংশ গ্রামের উন্নয়নের কাজে লাগাতে হবে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, দু’সপ্তাহ আগে পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে প্রধানের আলোচনা হয়েছিল। তখন ঠিক হয়েছিল, ইদ মিটে যাওয়ার পরে গ্রামের বিশিষ্টদের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে গাছ কাটা হবে। যদিও পঞ্চায়েত সদস্য শেখ হারাধনের দাবি, “কী ভাবে গাছগুলি বিক্রি করা হচ্ছে, আমার জানা নেই। গ্রামবাসীরাও অন্ধকারে রয়েছে।“ গাছ কাটার খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রুখে দাঁড়ান। কাটা গাছগুলি ট্রাকে তুলে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় গ্রামবাসীরা আটকে দেন।
গ্রামবাসী শেখ রজব আলী ও শেখ ফজলুল হকদের দাবি, “দীর্ঘদিন ধরে স্বনির্ভরগোষ্ঠীর সদস্যরা গাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। সরকারি নিয়ম মেনে গাছগুলি বিক্রি করা হলে আমাদের আপত্তি নেই। গাছ বিক্রির একাংশ টাকা গ্রামের উন্নয়ন খাতে কাজে লাগানো প্রয়োজন।“ পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় পূর্ব বর্ধমানে সেচখালগুলির আমূল পরিবর্তন করা হচ্ছে। সে জন্যে সেচখালগুলি সংস্কার ও চওড়া করার কাজ চলছে। সেচখালের পাড়ে গাছ থাকায় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে আধিকারিকরা বারবার প্রধানকে গাছগুলি কেটে নেওয়ার জন্যে বলেন। বৃহস্পতিবার প্রধান বলেন, “তিনদিন ধরে সেচখালের সংস্কার আটকে রয়েছে। মাটি কাটার যন্ত্র ফিরে যাচ্ছে। সেচ দফতর থেকে বারবার ফোন করে গাছ কেটে নেওয়ার জন্যে বলছে। বন দফতরের অনুমতি না নিলেও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই গাছ কাটা হয়েছে। গাছগুলি আপাতত পঞ্চায়েতের জিম্মাই থাকত, তারপর বিক্রি করা হতো।“