রবিবার প্রয়াত কংগ্রেস নেতা নুরল ইসলামের ১৪তম স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল পৃথক পৃথক দুটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এদিন নিখিল ভারত অসংগঠিত শ্রমিক এবং কর্মচারী কংগ্রেসের ডাকে কার্জন গেটে এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য চেয়ারম্যান স্বপন বসু, জেলা সভাপতি সুদীপ মজুমদার, জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রবীর গাঙ্গুলী, প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য লক্ষ্মী নায়েক, তরুণ রায়, জেলা সংখ্যালঘু সেলের কার্য্যকরী সভাপতি নাজির হোসেন সহ কংগ্রেস নেতারা। নুরুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবনধারা নিয়ে এদিন স্মৃতিচারণ করা হয়। অন্যদিকে, একদা নুরুল ইসলামের ছায়াসঙ্গী আজিজুল হক মণ্ডলের নেতৃত্বে নুরুল ইসলাম স্মৃতিরক্ষা কমিটির উদ্যোগে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে আয়োজিত হয় পৃথক সভা। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু সহ বিধায়ক ও অন্যান্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, নুরুল ইসলাম ছিলেন জননেতা। তাঁর সহজ, সরল জীবনযাত্রা আজকে সমস্ত নেতাদের কাছেই শিক্ষণীয় হয়ে ওঠা দরকার। এখন একজন পঞ্চায়েত সদস্যের জীবনযাত্রা দেখলে অবাক হতে হয়। নুরুল ইসলাম তা ভাবতেও পারেননি। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন, নুরুল ইসলামের হাত ধরেই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। নুরুল ইসলাম ছিলেন অকুতোভয়। সিপিএমের সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে একাই বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতেন। যা এখন তাঁরা ভাবতেও পারেন না। এখন তো নেতারা কোথাও গেলে আগেভাগে পুলিশী ব্যবস্থা করে তবেই সেখানে যান। কিন্তু নুরুল ইসলামের ওসবের বালাই ছিল না। এখন পদের জন্য কামড়াকামড়ি। কিন্তু নুরুল ইসলাম হেলায় পদ ছেড়ে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসে যাবার প্রশ্নেও তাঁর বক্তব্য ছিল, সিপিএমকে হারাতে মমতাকেই দরকার। তাঁর অনুগামীদের মমতাকে সমর্থন করতে বললেও নিজে কংগ্রেস ছেড়ে যাননি। বলেছিলেন কংগ্রেস তাঁর কাছে মায়ের মত। একটা আদর্শের লড়াই করতেন। স্বপনবাবু এদিন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এখন তিনি মন্ত্রী। কিন্তু নুরুলদার জন্য কিছু করতে পারেননি এই আক্ষেপ থেকেই গেছে তাঁর। স্বপনবাবু এরই পাশাপাশি এদিন বলেন, কালনায় যারা নুরুলদার অনুগামী তারা একটা মালাও দেন না। দুঃখ হয়। অথচ কালনা ছিল নুরুলদার রাজনীতির আঁতুরঘর। অনেকেই তাঁর দ্বারা উপকৃত। তাঁরাও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে একটা মালাও দেননা। এদিন স্বপনবাবু নুরুল ইসলাম স্মৃতি রক্ষা কমিটির কাছে আবেদন রাখেন নুরুল ইসলামের জীবনী নিয়ে একটি বই প্রকাশ করার জন্য, যাতে আগামী প্রজন্ম তাঁকে মনে রাখতে পারে।