‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’-এ টাকা পড়ে রয়েছে, অথচ কাজ শেষ হচ্ছে না বলে প্রশাসনের কর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। খুব দ্রুত কাজ শেষ করার জন্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের কর্তাদের নির্দেশ দিলেন প্রশাসনিক কর্তারা।
বুধবার সংস্কৃতি লোকমঞ্চে জেলার ত্রিস্তরীয় ওই বৈঠকে কাজের পর্যালোচনা করার সময় জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার উপস্থিতিতেই অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) কাজল রায় বলেন, “দু’তিন বছর ধরে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের টাকা পড়ে রয়েছে। এটা ভালো কথা নয়। খুব দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে।“ ওই বৈঠকেই জানা যায়, ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ থেকে কালনা ১, কালনা ২, পূর্বস্থলী ১, পূর্বস্থলী ২, কাটোয়া ২ ও কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিত ও গঙ্গা তীরবর্তী ওই সব ব্লকের ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত ৩৩ কোটি টাকা পেয়েছিল। তারমধ্যে ২৩ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের একটি রিপোর্টে দেখা যায়, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ২৬৫টি, কালনা ১ ব্লকে ১৯০টি সহ ওই ছ’টি ব্লকে৮৬৫টি জায়গায় নর্দমা, টিউবওয়েলের চাতাল তৈরির জন্যে এক কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা, বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্যে ১৯ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৫টি কাজের জন্যে তিন কোটি ৯২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় নতুন করে শৌচালয় তৈরির জন্যে ১১৭৮টি লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কালনা ২ ও কাটোয়া ২ ব্লকে কোনও শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল না। তবে কালনা ১ ব্লকে ২০৭টি, পূর্বস্থলী ১ ব্লকে ৪৯২টি, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ২১৬টি ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ২৬৩টি শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। তারমধ্যে ৫৯৩টি শৌচালয় তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় পুরনো আমলের একটি ‘পিট’ দেওয়া শৌচাগার ছিল। সেগুলিতে আরও একটি ‘পিট’ করার কথা। সেই মতো গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় ৩৫৩৪টি ‘পিট’ তৈরির এক কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আবার ৫৮টি ‘কমিউনিটি শৌচালয়’ তৈরির জন্যে প্রায় ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রশাসনের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলাপরিষদের কাছে কোনও কাজের জন্যেই খরচের শংসাপত্র বা ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট জমা পড়েনি।
এতদিন ধরে টাকা পড়ে থাকার কারণ কী?
ওই সব পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী বাস্তুকার বা বিডিওদের দাবি, ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের’ টাকা তারা খুব বেশি দিন পাননি। ওই টাকা পাওয়ার পরেই প্রতিটি কাজের দরপত্র ডাকা হয়েছে। বেশ কিছু কাজ শুরু হয়েছে। আবার অনেক কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম বলেন, “গ্রামীণ এলাকার অপরিশোধিত জল যাতে গঙ্গা দূষণ করতে না পারে সে জন্যে জোর দেওয়া হয়েছে। পড়ে থাকা টাকা দ্রুত কাজ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।“