পূর্ব বর্ধমান জেলার পরিবহণ দপ্তর রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করল।প্রশাসনের নজরের মধ্যে আসা অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই গাড়ি থেকে রেকর্ড পরিমাণ এই রাজস্ব আদায়ে গোটা রাজ্যের মধ্যে এই জেলা নজীরও গড়েছে। জেলাপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে পরিবহণ দফতর ৩৮ শতাংশ বেশি রাজস্ব বৃদ্ধি করে রাজ্যের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রথম স্থানে রয়েছে। জানা গেছে, কেবলমাত্র অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের দায়ে গত আর্থিক বছরে জেলা পরিবহণ দফতর জরিমানা বাবদ ২০ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা আদায় করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবী, পূর্ব বর্ধমান জেলার পর এই রাজস্ব আদায়ে স্থান রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ জেলার নাম। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ আর্থিক বছরের থেকে ৩৮ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে। করোনা জনিত সময়ে পূর্ব বর্ধমানের পরিবহণ দফতর ১২.৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল। এ বছর সেখানে ২০ কোটি ৫৮ লক্ষ ১৭ হাজার ৪৭১ টাকা আদায় করেছে। জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমানের পরে পশ্চিম বর্ধমান গত আর্থিক বছরে ১৯ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা আদায় করেছে এবং মুর্শিদাবাদ জেলা আদায় করেছে ১১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। রাজ্যের হিসেবে, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ৭৭ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের দায়ে যেখানে আয় হয়েছিল সেখানে সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে সেই আয় প্রায় ৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি হয়ে ১৩১ কোটি ৫১ লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, করোনার প্রকোপ কাটতেই জেলাশাসক জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। যেখানে এই অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর তারপরেই রাজ্য থেকে আনা হয় বিশেষ মেশিন। যার মাধ্যমে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের বিষয়টি চটজলদি নজরে আসে। একইসঙ্গে তৈরী হয় বিশেষ টিমও। অনেক সময় পরিবহণ দপ্তর কিংবা বিএলআরও দপ্তর রেইড করতে গিয়ে পুলিশী সহযোগিতা পাননা বলে একদা যে অভিযোগ উঠত, তা মেটাতে জেলা পুলিশকেও সর্বতোভাবে সাহায্য করার জন্য জেলাশাসক নির্দেশ দেন। হাতে হাতে ফল মেলে। উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমান জেলায় শক্তিগড়ে ২নং জাতীয় সড়কের জন্য রয়েছে একমাত্র চেকপোষ্ট। ফলে অনেকেই এই রাস্তাকে বাদ দিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে যাবার চেষ্টা করতে থাকে। আর তাঁরাও অন্যান্য রাস্তাগুলিতে নজরদারী বাড়িয়ে দেন। সবমিলিয়ে রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, এ জেলায় বালি ও পাথরের গাড়িতেই অতিরিক্ত পণ্য বোঝাইয়ের জন্য জরিমানা বেশি হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা আয় করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে জেলা পরিবহণ দফতর।