রাত পোহালেই বাঙালির আর এক উত্সব নববর্ষ। কেটে গেছে করোনার প্রকোপ। কিন্তু তারপরেও এই নববর্ষকে সামনে রেখে মোটেই খুশী নন বিশেষত ক্যালেণ্ডার বিক্রেতারা। বাংলা বা ইংরাজী নববর্ষ মানেই অবধারিতভাবে হাতে একটি সুন্দর ক্যালেণ্ডার। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে এই ক্যালেণ্ডারের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত হলেও এবছর ক্যালেণ্ডার বিক্রেতাদের দুশ্চিন্তা চরমে উঠেছে। আগামী শুক্রবার বাংলার নববর্ষ ১লা বৈশাখ। অন্যান্যবছর এই সময়ে দিনে রাতের ঘুম ছুটে যায় ক্যালেণ্ডার নির্মাতা থেকে বিক্রেতাদের। কিন্তু এবছর ভিন্ন চিত্র। খোদ ক্যালেণ্ডার বিক্রেতারা জানিয়েছেন, উর্ধমুখী দ্রব্যমূল্য। পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ক্যালেণ্ডারের জন্য বিশেষ কাগজের দামও। বর্ধমানের দত্ত সেণ্টারের ক্যালেণ্ডার সরবরাহকারী রাজকুমার পণ্ডিত জানিয়েছেন, বাজারে সমস্ত জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। সেই অর্থে সাধারণ দোকানদারদের হাতে নগদ অর্থের প্রচুর টান। সাধারণ মানুষের হাতেও টাকা নেই। ফলে তাঁরাও ন্যূনতম কেনাকাটাতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছেন। আর এসবের প্রভাব এসে পড়েছে এবার ক্যালেণ্ডার বাজারেও। তিনি জানিয়েছেন, গতবছর করোনা আবহের মাঝেও ক্যালেণ্ডার বিক্রি ভালই হয়েছিল। এমনকি গত জানুয়ারী মাসে তথা ইংরাজী নববর্ষেও তাঁরা ভালই ব্যবসা করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি লাগাতার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাংলা নববর্ষে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রাজকুমারবাবু জানিয়েছেন, অন্যান্যবার যাঁরা ৫০০ ক্যালেণ্ডারের অর্ডার দিতেন তাঁরাই এবার ১০০ থেকে ১৫০ ক্যালেণ্ডারের অর্ডার দিচ্ছেন। এদিন ব্যবসায়ী রাহুল দাস জানিয়েছেন, গতবারের থেকে এবছর ক্যালেণ্ডারের একশো পিছু দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ফলে তাঁদের বাজেটেও কাটছাঁট করতে হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, ক্যালেণ্ডারের সঙ্গে একটা মিষ্টির প্যাকেট সবমিলিয়ে এবছর খরচ অনেকটাই বেশি। ফলে তাঁরাও হাত খুলে কিছু করতে পারছেন না। রাজকুমারবাবু জানিয়েছেন, হাতে মাত্র আর কটা দিন। এখনও পর্যন্ত দু-একটা যা অর্ডার তাঁরা পেয়েছেন তার মধ্যে বেশিরভাগই, লক্ষ্মী, গণেশের ছবি সম্বলিত ক্যালেণ্ডারেরই চাহিদা। তিনি জানিয়েছেন, গতবারের থেকে ৪০ শতাংশ দাম বেড়েছে ক্যালেণ্ডারের। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এবছর আর কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক সম্বলিত ক্যালেণ্ডারের চাহিদা নেই।